ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে থেকে বিএনপি’র ৮ প্রার্থী মনোনয়ন পেতে এখন থেকেই বিভিন্নভাবে লবিং করার চেষ্টা করছেন।
ফজলুল হক জয়||
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল আশুগঞ্জ) সংসদীয় আসনে এ পর্যন্ত মাঠে নেমেছেন বিএনপি থেকে কমপক্ষে ৮ প্রার্থী।ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন এই প্রার্থীগণ।ইসির ঘোষণা মোতাবেক এ বছরের ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে এমন সম্ভাবনাকে সামনে রেখে দলীয় হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে জোরেসোড়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন অনেকেই। তবে এই আসন থেকে ৮ প্রার্থী মনোনয়ন চাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করলেও মাঠে সরব নেই সবাই।আসনটিতে বিএনপি কমপক্ষে দুই থেকে তিনটি গ্রুপে বিভক্ত। অনুসন্ধানে উঠে আসে এমন চিত্র।
মাঠ জরিপে দেখা যায়,এই আসন থেকে বিএনপি’র মনোনয়ন দৌড়ে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন যথাক্রমে প্রবীণ বিএনপি নেতা খ্যাত সরাইল উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও সরাইল উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এড. আবদুর রহমান,ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সদস্য আহসান উদ্দিন খান শিপন,হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে,সরাইল উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. নুরুজ্জামান লস্কর তপু এবং আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু আসিফ আহমেদ।
যোগাযোগ করা হলে এড. আবদূর রহমান বলেন,প্রায় ৩০ বছর সরাইল উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি এবং এই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানও ছিলাম।রাজনীতির সূচনা থেকে অদ্যাবধি দলকে সু সংগঠিত করার চেষ্টা করছি।আশা করছি দল আমাকেই বিবেচনা করবেন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে সরাইল উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী বলেন,সরাইল- আশুগঞ্জের সর্বস্তরের জনগণের কাছে অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান একজন ক্লিন ইমেজের লোক হিসেবে পরিচিত।পরিচ্ছন্ন এবং অভিজ্ঞ এই নেতাকে মনোনয়ন প্রদান করা হলে বিপুল ভোটে তিনি বিজয়ী হতে পারবেন বলে মত প্রকাশ করেন তারা।
মনোনয়ন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একাধিকবার জেল,জুলুম ও হুলিয়ার শিকার সাবেক ছাত্রনেতা আহসান উদ্দিন খান শিপন রূপসী বাংলাকে বলেন,দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের নির্দেশে ৩১ দফা বাস্তবায়নের যে কর্মসূচি প্রতিনিয়ত সেটি চালিয়ে যাচ্ছি।ত্যাগ-তিতীক্ষা ও কর্মকান্ড বিবেচনায় দলীয় মনোনয়ন পাবেন বলে তিনি শতভাগ বিশ্বাস প্রকাশ করেন।আহসান উদ্দিন খান শিপন সম্পর্কে জানতে চাইলে সরাইল- আশুগঞ্জের তৃণমূল পর্যায়ের বেশিরভাগ নেতাকর্মী বলেন,অতীত এবং বর্তমান কর্মকাণ্ড বিবেচনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে একমাত্র যোগ্য নেতা হচ্ছেন আহসান উদ্দিন খান শিপন।
এই আসন থেকে নমিনেশন চাইবেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।জানা গেছে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা সবার কাছে একজন পরিচিত মুখ ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হলেও তার নির্বাচনী এলাকায় সমর্থকগণ তার থেকে আরো বেশি সময় ব্যয় করবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
এ আসনে দলের মনোনয়ন পেতে কাজ করে যাচ্ছেন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এস এন তরুণ দে বিএনপির একজন নিবেদিত নেতা। দলীয় মনোনয়ন পেলে তিনি চমক দেখাবেন বলে অনেকেই মত প্রকাশ করেন।
এড. নুরুজ্জামান লস্কর তপু বিএনপিকে সুসংগঠিত করার জন্য সরাইল-আশুগঞ্জের পুরো মাঠ চৌষে বানানোর চেষ্টা করছেন।স্থানীয় বিএনপির একটা অংশের মতে,অ্যাডভোকেট নুরুজ্জামান লস্কর তপু যোগ্য প্রার্থীদের অন্যতম একজন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের অন্যতম একজন প্রার্থীর নাম আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু আসিফ আহমেদ।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,আসিফ আহমেদ যে কোন সময় রাজানৈতিক জটিলতা কাটিয়ে উঠতে পারেন আর সেটাই হতে পারে তার জন্য টার্নিং পয়েন্ট।অভিজ্ঞ এই রাজনীতিবিদ যেকোনো সময় বাজিমাত করতে পারেন বলে অনেকেরই ধারণা।ভোটের মাঠে তাকে একজন পরিপক্ক প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে রাখতে চান অনেকেই।
দলীয় হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সরাইল উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনিসুল ইসলাম ঠাকুর বলেন,জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তিনি দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন।আস্থা প্রকাশ করে তিনি বলেন,যেহেতু কখনো দলের অবাধ্য হন নি দল তাকে নিরাশ করবেন না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে আরেকজন মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা শেখ শামীমের নাম উঠে এসেছে।মোবাইল ফোনে এর সত্যতা জানতে চাইলে শেখ শামীম এর পক্ষে অভয় দেন।
সরাইল-আশুগঞ্জের বেশিরভাগ বিএনপির নেতাকর্মীই মনে করেন নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠে আরো একাধিক প্রার্থী আসতে পারেন তবে এলাকায় সর্বোচ্চ গ্রহণযুক্ত ব্যক্তিকেই দল মনোনয়ন দিবে বলে তারা বিশ্বাস করেন।