দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে বহুল আলোচিত কুমিল্লা জেলা পরিষদ নির্বাচনে ডজন খানেক প্রার্থীর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে আঃলীগের দলীয় মনোনয়ন পেলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. মফিজুর রহমান বাবলু।
নিউজকাস্ট24 কে তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন,” আমাকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দেওয়ায় দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আমরণ কৃতজ্ঞ “
বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুর রহমান বাবলু, যিনি একজন বর্ষীয়ান রাজনীতিবীদ, প্রখ্যাত আইনজীবী ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। ১৯৪৬ সালের ১০ আগস্ট জন্ম নেওয়া বাবলু তার মামা আওয়ামী লীগ সহ সভাপতি কাজী জহিরুল কাইয়ুমের হাত ধরে ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে রাজনীতির পথে পা বাড়ান। তারপর ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলনে অংশ নেন। ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত ছিলেন অবিভক্ত কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
সে সময় জাতির পিতা ঘোষিত বাঙালির মুক্তির সনদ ছয়দফা আন্দোলনে অংশ নেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ঊনসত্তরের গণআন্দোলনে অংশ নেন ডাকসুর সদস্য হিসেবে। সত্তরের নির্বাচনে দলের হয়ে কাজ করেন। অংশ নেন একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সমাজকল্যাণ সম্পাদকের।
পরে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত ছিলেন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। ১৯৮২ ও ১৯৮৮ সালে দলীয় কর্মসূচি পালনকালে বিএনপি ও ফ্রিডম পার্টির নির্যাতনের শিকারও হয়েছেন রণাঙ্গনের এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।
মফিজুর রহমান বাবলু ছিলেন ২ নাম্বার সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা। আগরতলার রাধানগরে যুব মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে তিনি সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেন। পুরো মুক্তিযুদ্ধের সময় চৌদ্দগ্রামে তার নিজের বাড়িটি ছিল মুক্তিবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্প। আওয়ামী লীগের নেতারাও বিভিন্ন সময়ে সেখানে বৈঠকে মিলিত হতেন। তার আরেকটি পৈতৃক বাড়িসহ এ দুটি বাড়িতে প্রায়ই পাকিস্তানি বাহিনী হানা দিত। একপর্যায়ে পাকিস্তানিরা একটি বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। মুক্তিযোদ্ধা বাবলুর চার চাচা সেই আগুনে শহীদ হন।
দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি মফিজুর রহমান বাবলু নিজেকে জড়িয়েছেন বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিনেট সদস্য কুমিল্লা ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন ও কুমিল্লা ক্লাবের সদস্য। তিনি বাংলাদেশ ফ্যামিলি প্ল্যানিং অ্যাসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য। লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল, কুমিল্লা লায়ন্স ক্লাব, কুমিল্লা কালচারাল কমপ্লেক্সের সঙ্গে জড়িত বাবলু কুমিল্লা শহর ও চৌদ্দগ্রামে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানও গড়ে তুলেছেন। বৈশ্বিক মহামারি করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে এসেছিলেন রণাঙ্গনের এই বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুর রহমান বাবলু।
বঙ্গবন্ধু অন্তঃপ্রাণ পঁচাত্তর বছর বয়সি এ মুক্তিযোদ্ধার চাওয়া বঙ্গবন্ধুকন্যার হাতে পূর্ণতা পাক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা। প্রধানমন্ত্রীর সহযোদ্ধা হয়ে নিজেকে সেই কর্মকাণ্ডে আরও সম্পৃক্ত করতে চান তিনি।
ছাত্র জীবন থেকে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃত্ত। ১৮৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট্রের কর্মী ও পাকিস্তান সাধারন নির্বাচনকালীন একজন সক্রিয় কর্মী হিসাবে ভূমিকা রাখেন,এছাড়া তিনি ১৯৬২ সালে ছাত্রলীগের কর্মী হিসাবে আমি শিক্ষা সংস্কার আন্দোলনের সাথে সক্রিয় ছিলেন।
১৯৬৪-৬৬ দুই মেয়াদে বৃহত্তর কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন,তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (১৯৬৬) সালে তিনি বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য নির্বাচিত হয় ।
মফিজুর রহমান বাবলু সম্পর্কে আওয়ামী লীগের উদীয়মান নেতা অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মিঠু বলেন, “প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা যোগ্য ব্যক্তির হাতেই কুমিল্লা জেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা তুলে দিয়েছেন। আমরা আশা করছি তাঁর হাত ধরেই কুমিল্লা জেলা পরিষদ গতি ফিরে পাবে “