১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ| ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ| ২৮শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি| সকাল ১০:০৯| হেমন্তকাল|
শিরোনাম:
কুমিল্লায় কৃষকদের মাঝে ধানের বীজ ও কৃষি উপকরণ বিতরণ কুমিল্লায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে নগদ অর্থ ও কৃষি প্রণোদনা বিতরণ বুড়িচংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় খণ্ড-বিখন্ড ৭ অটো রিকশা যাত্রী;আহত ২ কুমিল্লায় সদর দক্ষিণের ইউএনও’র সাথে মোতায়াল্লী সমিতির মত বিনিময় বরুড়ায় UNO’র সাথে মোতায়াল্লী সমিতির মত বিনিময় মনোহরগঞ্জের মৈশাতুয়ায় বিএনপির কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত বিএনপি ক্ষমতায় আসলে শিক্ষকদের সমস্যার সমাধান হবে- নাঙ্গলকোটে শিক্ষক সমাবেশে সেলিম ভূঁইয়া কুমিল্লায় জিয়া গবেষণা পরিষদ মহানগর শাখার উদ্যোগে কর্মীসভা অনুষ্ঠিত দ্রুত নির্বাচন দিয়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করুন-অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে যাঁরা ছিলেন সবাইকে নিয়ে সরকার গঠন করা হবে-বরকত উল্লাহ বুলু

বুড়িচং এ সিটি ব্যাংকের এজেন্ট মোহন মিয়ার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২,
  • 108 Time View

বুড়িচং প্রতিনিধি।।

কুমিল্লার বুড়িচং এ সিটি ব্যাংকের এজেন্ট মোহন মিয়ার প্রতারণায় অনেক মানুষ নিঃস্ব হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গ্রাহকের লক্ষাধিক টাকা আত্নসাৎ করে বর্তমানে এই শাখাটি বন্ধ করে পলাতক আছে বলে ভোক্তভোগীরা জানায়। পলাতক মোহন মিয়া উপজেলার ৪নং ষোলনল ইউনিয়নের খাড়াতাইয়া গ্রামের রাজ্জাক সর্দার বাড়ীর হারুন মিয়ার পালক পুত্র।

ঋণ দেওয়ার নাম করে জামানত হিসাবে গ্রাহকদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা গ্রহন করে, অবশেষে সেই টাকা গ্রাহকের হিসাবে হিসাবভুক্ত না করে আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ ভোক্তভোগীদের। গ্রাহকদের অর্থ আত্নসাৎ করে দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর বর্তমানে সে কুমিল্লা জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, সি বুড়িচং উপজেলা থেকে সদস্য পদে অটোরিক্সা মার্কায় প্রতিদ্বন্দিতা করছে বলে জানা যায়। যা দৃষ্টিগোচর হয় ভোক্তভোগীদের। । নির্বাচনী মাঠে সরব থাকলেও ভোক্তভোগীরা তাকে খুজে পাচ্ছেন না তার দেয়া মোবাইল নাম্বারে, যাদের টাকা আত্নসাৎ করেছেন তাদের অনেকের নাম্বার তিনি ব্লক রেখেছেন আবার, অনেককে মামলা হামলার ভয় দেখিয়ে চুপ থাকতে বাধ্য করেছেন।

জানা যায়, এ ঘটনায় বুড়িচং থানায় এসডিআর(নাঃ শিঃ) নং-১০৯ এ ২০২১ সালের মে মাসের ৩ তারিখে মোহন মিয়ার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ করে ২ গ্রাহক। এদিকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুড়িচং থানার এস আই আব্দুল জব্বার এর নির্দেশনায় ভোক্তভোগী গ্রাহকদের সাথে বুড়িচং থানায় ৩০ জুন ২০২১ এর মধ্যে আপোষ মীমাংসার লক্ষে এবং অর্থ ফেরতের উদ্দেশ্যে স্ট্যাম্পে লিখিত অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর করে মোহন মিয়া। কিন্তু এ ঘটনার দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও অর্থ ফেরত পায়নি গ্রাহকরা বরং উল্টে তার মামলা হামলার হুমকিতে আশংকায় দিন কাটছে অভিযোগকারী পরিবারের।

প্রতারণার শিকার গ্রাহকদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, সিটি ব্যাংকের এজেন্ট মোহন মিয়া ব্যাংক থেকে মানুষদের ঋণ দিবে বলে প্রস্তাব দেয় এবং এই জন্য আংশিক টাকা জামানত দেয়া প্রয়োজন দেখিয়ে বিভিন্ন গ্রাহকের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে, যেহেতু সিটি ব্যাংক বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠিত ব্যাংক সেই হিসাবে এজেন্ট ব্যাংকের বুড়িচং শাখায় নিশ্চিন্তে টাকা রাখতে পারে বলে ধারনা গ্রাহকদের। কিন্তু লক্ষধিক টাকা আত্নসাৎ করলেও সিটি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের তেমন তৎপরতা লক্ষ করা যায়নি। এ বিষয়ে গ্রাহকরা সিটি ব্যাংকের এলকা ব্যবস্থাপক নোমান মিয়ার নিকট অভিযোগ দিলেও তিনি সাত্বনা ছাড়া আর কিছুই দিতে পারেননি বলে জানান গ্রাহকরা। গ্রাহকের টাকা আত্নসাৎ করে বুড়িচং উপজেলার সিটি ব্যাংকের এজেন্ট শাখা বন্ধ করে পলাতক মোহন মিয়ার বিষয়ে সিটি ব্যাংকের এলাকা ব্যবস্থাপক নোমান মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমরা আমাদের প্রধান কার্যালয়ে অবহিত করেছি, ইতিমধ্যে গ্রাহকের অর্থ আত্নসাৎ এর বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে আমরা তাকে নোটিশ দিয়েছি এছাড়াও সে পলাতক থাকায় এবং তাহার মোবাইল নম্বর বন্ধ বিধায় যোগাযোগ করতে না পেরে আমরা তাহার পিতার সাথে যোগাযোগ করি এবং তিনি আমাদেরকে নির্বাচনের ব্যাস্ততার জন্য এখনি সমাধান করতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বিষয়গুলি সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেন। দীর্ঘ এক বছরের ও বেশী সময় পার হলেও কেন আইনি পদক্ষেপ নেয়া হয়নি কেনো এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেননি তবে পরবর্তীতে প্রধান কার্যলয়ের নির্দেশ মোতাবেক মোহন মিয়ার বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান, পাশাপাশি যাদের টাকা আত্নসাৎ করেছে তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের অর্থ ফিরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হবে বলেও তিনি আশাবাদী।

বুড়িচং থানায় অভিযোগ কারী নূরজাহান বেগম জানায়, ঋণ নিতে হলে ব্যাংকিং নিয়ম নীতি অনুযায়ী জামানত দিতে হবে বলে জানায় মোহন এবং জামানত পেলে অল্প সময়ে ৫০০০০০(পাচঁ লক্ষ) টাকা লোনের প্রলোভন দেখায় মোহন। লোনের প্রসেসিং বাবদ জামানত হিসাবে ২০২০ সালের ৩০ডিসেম্বর ২ জন থেকে ১ লক্ষ ৩০হাজার টাকা নেয়া হয়। টাকা এজেন্ট ব্যাংকের বুড়িচং শাখায় জমা দিয়ে রিসিট সংগ্রহ করলেও রিসিটে উল্লেখিত অর্থ হিসাবভুক্ত হয়নি, এভাবে শত শত গ্রাহকের টাকা হিসাবভুক্ত করা হয়নি বলেও ধারনা ভোক্তভোগী অনেকের। অন্য সবার মতো নুরজাহান আক্তারের কাছ থেকেও সোনালী ব্যাংক বি-পাড়া শাখার ২টি খালি চেক নেয় যার পাতা নং ০৭২৬৩২৭ ও ০৭২৬৩২৮। তারপর সে দেড় মাসের মধ্যে লোন প্রসেস করে দিবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয় তাদেরকে। কিন্তু এ ঘটনার দেড় মাস পার হলেও লোন না পেয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে নানা টাল বাহানা করে এড়িয়ে যায়। পরে এ বিষয়ে গ্রাহকরা তাদের আত্মীয় স্বজন নিয়ে ২০২১ সালের এপ্রিল মাসের ২৯ তারিখে তার বাড়িতে গিয়ে জমাকৃত অর্থ ফেরত চাইলে সে গ্রাহকদের মিথ্যা মামলাসহ নানা প্রকারের হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। এই বিষয়ে মোহন মিয়ার সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাহার দেয়া নাম্বারে ( ০১৭২৭-৫৫৭৭১৭) তাকে পাওয়া যায়নি। একই উপায়ে সে বিপাড়া কলেজ রোডের ফেরদৌসি আক্তার এর কাছ থেকেও সমপরিমান টাকা নেয়। তিনিও টাকা ফিরত চাইলে তাকেও মামলা হামলা দিবে বলে হয়রানি করছে বলে জানান তিনি। তাহার স্বামী প্রবাসী, বর্তমানে তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে ব্রাহ্মণপাড়া কলেজ রোডে ভাড়া বাসায় থাকেন। মামলা ও হামলার ভয়ে তিনি ছেলে সন্তান নিয়ে আতংকে দিন কাটাচ্ছেন।

উপায় না পেয়ে ভোক্তভোগীরা থানায় পুনরায় যোগাযোগ করা হলে অভিযোগ এর তদন্ত কর্মকর্তা এস আই আব্দুল জব্বার মোহন মিয়ার নামে কোর্টে মামলা করার পরামর্শ দেন বলে জানা যায়। এ বিষয়ে বুড়িচং থানার এস আই আব্দুল জব্বার এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন এই বিষয়টি নিয়ে তিনি অবগত আছেন এবং আত্নসাৎকৃত অর্থ ফেরতের বিষয়ে মীমাংসা করতে মোহন মিয়ার সাথে কথা বলেন, পরে মোহন মিয়া এলাকার অন্য এক ব্যাক্তিকে সাথে নিয়ে থানায় এসে উপস্থিত ভোক্তভোগীদের সামনে সামাজিক ভাবেই একটি অঙ্গীকার নামা দিয়ে যান। কিন্তু অনেক সময় অতিবাহিত হলেও টাকা ফিরত না দেওয়ায় ভোক্তভোগী দুজন পুনরায় আসলে তাদের অনুরোধে আমি মোহন মিয়ার বাড়ীতে যাই, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মোহন বাসার পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়, পরে মোহনের পিতা মাতার সাথে কথা হলে তারা উল্লেখিত টাকা ফেরত দিবে বলে জানায়। সবশেষেও যখন টাকা ফেরত পাওয়া যায়নি তখন তাদের কে কোর্টে মামলা করার বিষয়ে পরামর্শ দেই।

বিষয়টি নিয়ে ন্যায়বিচারের স্বার্থে স্থানীয় চেয়ারম্যান এর নিকট লিখিত অভিযোগ দেয়া সহ কোর্টে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানায় কয়েকজন ভোক্তভোগী। এই বিষয়ে ৪ নং ষোলনল ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান হাজী বিল্লাল হোসেন জানান, অর্থ আআত্নসাৎ এর বিষয়ে কেউ এখনো অভিযোগ না করলেও মোহন এলাকার খাড়াতাইয়া গ্রামের হারুন মিয়ার পালক পুত্র এবং তাকে সে একজন জাতীয় চিটার হিসাবে তাকে আখ্যায়িত করেন, পাশাপাশি ভবিষ্যতে তার সাথে কেউ অর্থনৈতিক লেনদেন না করার বিষয়ে পরামর্শ দেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category