ফজলুল হক জয়।।
কুমিল্লা জেলায় ১০৭টি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স নেই। এর মধ্যে ৮৮টি প্রতিষ্ঠানের আবেদন লাইসেন্সের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং ১৯টি প্রতিষ্ঠান একেবারে বন্ধ রয়েছে। লাইসেন্স পাওয়া মোট প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪৬৬টি।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এবং ১৭ উপজেলার ৫৭৩টি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এই হালনাগাদ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা সিভিল সার্জন নাছিমা আক্তার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, একটি বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানের পূর্ণাঙ্গ লাইসেন্স পেতে হলে পরিবেশ সনদ, নারকোটিক (মাদক) সনদ, ফায়ার লাইসেন্সসহ মোট ২১টি শর্ত পূরণ করতে হয়। এগুলো ছাড়া তারা কোনো রোগীকে সেবা দিতে নিবন্ধিত হতে পারে না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব অনিবন্ধিত বা লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠানের আড়ালেই অপচিকিৎসা ও ভুল চিকিৎসায় প্রাণহানির মতো ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে সাধারণ মানুষ। ২০২৩ সালে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকায় কয়েকটি ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসার দায়ে প্রাণহানির ঘটনা সারা দেশে সমালোচিত হয়। পরে সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয় স্বাস্থ্য বিভাগ।
এরই মধ্যে অভিযান চালিয়ে লাইসেন্সবিহীন কিছু প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে।
এরই মধ্যে অভিযান চালিয়ে লাইসেন্সবিহীন কিছু প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে।
জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুসারে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৪৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪টি বেসরকারি ক্লিনিকও ডায়াগনস্টিক প্রতিষ্ঠান রোগীদের সেবা প্রদানের জন্য পূর্ণাঙ্গ লাইসেন্স সংগ্রহ করতে পারেনি। দাউদকান্দিতে লাইসেন্স নেই ১০টির, লাকসামে লাইসেন্স নেই ৯টির, চৌদ্দগ্রামে লাইসেন্স নেই ৮টির, নাঙ্গলাকোটে লাইসেন্স নেই ৭টির, মুরাদনগরে লাইসেন্স নেই ৪টির, বরুড়ায় লাইসেন্স নেই ৫টির, বুড়িচংয়ে লাইসেন্স নেই একটির, ব্রাহ্মণপাড়ায় লাইসেন্স নেই ৫টির, তিতাসে লাইসেন্স নেই ৯টির, মেঘনায় লাইসেন্স নেই ৮টির, মনোহরগঞ্জে লাইসেন্স নেই ৪টির, লালমাইতে লাইসেন্স নেই ৬টির, হোমনায় লাইসেন্স নেই ৫টির, চান্দিনায় লাইসেন্স নেই ৫টির এবং সদরে লাইসেন্স নেই একটির। দেবিদ্বারে সব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স আছে।
কুমিল্লা বেসরকারি ক্লিনিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রইস আবদুর রব ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অবশ্যই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আমাদের আগে উচিত প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স গ্রহণ, কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা আগেই প্রতিষ্ঠান খুলে বসি। নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন, আশা করি কুমিল্লার লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধেও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জেলার সিভিল সার্জন নাছিমা আক্তার বলেন, ‘লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠানের তালিকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। যাদের লাইসেন্স প্রক্রিয়াধীন রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অধিদপ্তর নির্দেশনা দেওয়া হবে। আর যাদের লাইসেন্স নাই তাদের বন্ধ করা হয়েছে। আমরা সব প্রতিষ্ঠানকেই পর্যবেক্ষণে রাখছি। যাদের বিরুদ্ধেই নিয়ম লঙ্ঘন অভিযোগ আসবে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেব। আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে।’