চট্টগ্রাম-১২ আসনে গ্রীন সিগন্যালের অপেক্ষায় বিএনপি’র ৫ প্রার্থী; চমক দেখাতে পারেন যে কেউ
ফজলুল হক জয় ||
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে গ্রীন সিগন্যালের অপেক্ষা করছেন বিএনপি’র সম্ভাব্য ৫ প্রার্থী।
পটিয়া চট্টগ্রাম জেলার একটি প্রাচীন ও সমৃদ্ধ জনপদ হিসেবে পরিচিত।ইতিহাস ও ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ এই উপজেলার মানুষ অত্যন্ত বিচক্ষণ।জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে খুব আগ্রহী মনোভাব রয়েছে এখানকার মানুষের। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোড ম্যাপ ঘোষণার পর বিএনপি’র ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত পটিয়ার জনগণের কৌতহলের শেষ নেই-কে হতে যাচ্ছেন চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের ধানের শীষের কাণ্ডারি!
ইতিহাস-বিশ্লেষণে দেখা যায় ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত এই আসনটিতে টানা নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করেন বিএনপি। ২০০৮ সালে তা আওয়ামী লীগের দখলে চলে যায়। তারপর থেকে জোর- জবরদস্তি এবং রাতের ভোটে আসনটি টানা আওয়ামী লীগের দখলে ছিল। জনশ্রুতি রয়েছে পটিয়া উপজেলাটি বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে ব্যাপকভাবে খ্যাতী লাভ করেছেন। তবে ভোটের মাঠে লড়তে হলে ক্লিন ইমেজ,উচ্চ শিক্ষিত এবং ভদ্র প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া না হলে বিপর্যয় ঘটতে পারে ধানের শীষের।
স্থানীয় সূত্রমতে, এখানে বিএনপি’র মনোনয়ন পেতে কাজ করছেন কমপক্ষে অর্ধ ডজন প্রার্থী। তন্মধ্যে মনোনয়ন পেতে তীব্র আশাবাদী ৪ জন প্রার্থী যারা গ্রীন সিগনালের অপেক্ষায় রয়েছেন এবং মাঠে জোরালো তৎপরতা চালানোর চেষ্টা করছেন।
এখানে মনোনয়ন পেতে কাজ করছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র বর্তমান আহবায়ক এবং পটিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইদ্রিস মিয়া।অনুসন্ধানের ভিত্তিতে পাওয়া তথ্য মতে, ইদ্রিস মিয়ার রয়েছে ওয়ার্ড পর্যায়ে থেকে শুরু করে উপজেলা পরিষদ পর্যন্ত নির্বাচনের অভিজ্ঞতার ঝুলি। অভিজ্ঞতা বিবেচনায় তিনিই পেতে পারেন হাই কমান্ডের গ্রীন সিগন্যাল। জানতে চাইলে এক সাক্ষাৎকারে ইদ্রিস মিয়া জানান,এমন বয়সেও তিনি দৈনিক সর্বোচ্চ ৫-৬ ঘন্টা ঘুমান আর বাকি সময়টুকুই দলকে সংগঠিত করার জন্য কাজ করছেন। দল তাকে সেইভাবে মূল্যায়ন করবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এই আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাচ্ছেন সাবেক দুইবারের সাংসদ গাজী শাহজাহান জুয়েল।পটিয়ার জনসাধারণের কাছে তিনি একজন ভদ্র ও নম্র ব্যক্তিত্ব হিসেবে সবার কাছে ব্যাপকভাবে সমাদৃত। দলীয় মনোনয়ন পেতে তিনি তার অতীতের দুইবারের অভিজ্ঞতা কে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।
এই আসনে একজন আলোচিত প্রার্থীর নাম হচ্ছে এনামুল হক এনাম যিনি প্রতিনিয়ত দলীয় প্রোগ্রাম নিয়ে মাঠে সরব থাকার চেষ্টা করছেন। অনুসন্ধানের ভিত্তিতে পাওয়া তথ্য মতে এনামুল এনাম যে কোন সময় দল থেকে সবুজ সংকেত পেয়ে যেতে পারেন।নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে এনাম বলেন,কাক ডাকা ভোর থেকে থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছি এবং যেকোনো সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত।
এখানে আলোচিত আরেক প্রার্থীর নাম হচ্ছে গাজী সিরাজউল্লাহ। জানা যায়,আওয়ামী সরকারের আমলে তিনি দলের জন্য সবচেয়ে বেশি জেল-জুলুম,হুলিয়া সহ বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।অতীত ত্যাগ-তিতিক্ষা বিবেচনায় যেকোনো সময় দল থেকে সবুজ কার্ড পেতে পারেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুদর্শন এই নেতা।
চট্টগ্রাম-১২ আসনে মনোনয়ন পেতে আরো কাজ করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক সাইফুদ্দিন সালাম মিঠু। মাঠ জরিপে জানা যায়,মিঠু শুধু পটিয়াতেই নয় চট্টগ্রাম এবং ঢাকার রাজনীতিতেও ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন । শিক্ষা-দীক্ষা, ভদ্রতা-নম্রতা এবং ক্লিন ইমেজ বিবেচনায় পটিয়ার ভোটারদের বড় একটা অংশ বেছে নিতে চায় এই তরুণ ও ত্যাগী নেতাকে। তাই তৃণমূল পর্যায় থেকে হাই কমান্ড পর্যন্ত অনেকেই বলছেন যেকোনো সময় মিঠু দলীয় গ্রীন সিগন্যাল ফেলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। এক সাক্ষাৎকারে মিঠু বলেন, এই দলের জন্য জেল, জুলুম এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছি। মিঠু দৃঢ় বিশ্বাস ব্যক্ত করে বলেন,দলীয় মনোনয়ন ইনশাআল্লাহ আমিই পাবো।
জানা যায়,এ আসনে মনোনয়ন পেতে আরো কাজ করে যাচ্ছেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সৈয়দ সাদাত আহমদ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মী এবং সমর্থকরা দলীয় হাইকমান্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন পটিয়ায় ধানের শীষকে বিজয়ী করতে হলে প্রয়োজন একজন উচ্চশিক্ষিত,তারুণ্যদীপ্ত এবং যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব যাকে সাধারণ ভোটারগণ খুব সহজেই গ্রহণ করবেন। তবেই জনগণ তাকে ধানের শীষের সাংসদ নির্বাচিত করে সংসদে পাঠাবেন।