১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ| ২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ| ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি| রাত ২:২৩| হেমন্তকাল|
শিরোনাম:
কুমিল্লায় কৃষকদের মাঝে ধানের বীজ ও কৃষি উপকরণ বিতরণ কুমিল্লায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে নগদ অর্থ ও কৃষি প্রণোদনা বিতরণ বুড়িচংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় খণ্ড-বিখন্ড ৭ অটো রিকশা যাত্রী;আহত ২ কুমিল্লায় সদর দক্ষিণের ইউএনও’র সাথে মোতায়াল্লী সমিতির মত বিনিময় বরুড়ায় UNO’র সাথে মোতায়াল্লী সমিতির মত বিনিময় মনোহরগঞ্জের মৈশাতুয়ায় বিএনপির কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত বিএনপি ক্ষমতায় আসলে শিক্ষকদের সমস্যার সমাধান হবে- নাঙ্গলকোটে শিক্ষক সমাবেশে সেলিম ভূঁইয়া কুমিল্লায় জিয়া গবেষণা পরিষদ মহানগর শাখার উদ্যোগে কর্মীসভা অনুষ্ঠিত দ্রুত নির্বাচন দিয়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করুন-অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে যাঁরা ছিলেন সবাইকে নিয়ে সরকার গঠন করা হবে-বরকত উল্লাহ বুলু

১৫ রমজান শুক্রবারে কি পৃথিবীতে বিকট আওয়াজ হবে?

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, এপ্রিল ৫, ২০২৩,
  • 81 Time View

Newscast24tv copied from Dhakamail

কেয়ামতের সর্বপ্রথম বড় আলামত ইমাম মাহদির আত্মপ্রকাশ। মহানবী (স.) থেকে প্রমাণিত ভবিষ্যদ্বাণীর আলোকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদা-বিশ্বাস হলো শেষ জমানায় প্রতিশ্রুত ইমাম মাহদির আবির্ভাব সত্য। ইমাম মাহদি নবী-পরিবার থেকেই হবেন। উম্মে সালমা (রা.) বলেন, আমি রাসুল (স.)-কে বলতে শুনেছি, ‘মাহদি আহলে বাইতের ফাতেমি বংশ থেকেই হবেন। (সুনানে আবি দাউদ: ৪২৮৪)

তিনি একজন একনিষ্ঠ ও ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি, যিনি মুসলমানদের খলিফা হবেন। হাদিসে এসেছে, ইমাম মাহদির নাম মহানবী (স.)-এর নামের মতো হবে। তাঁর বাবার নাম হবে মহানবী (স.)-এর বাবার নামে। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যদি কেয়ামত সংঘটিত হওয়ার মাত্র একদিনও অবশিষ্ট থাকে তবুও আল্লাহ তাআলা ওই দিনকে দীর্ঘ করবেন এবং আমার বংশের এক ব্যক্তিকে প্রেরণ করবেন। তার নাম আমার নামের সঙ্গে এবং তার পিতার নাম আমার পিতার নামের সঙ্গে মিলে যাবে।’ (আবু দাউদ: ৪২৮২)

তাঁর গঠন-প্রকৃতি হবে খুবই সুন্দর। হোজাইফা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, তার চেহারা হবে উজ্জ্বল তারকার ন্যায়।’ (কানজুল উম্মাল: ৩৮৬৬৬)। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (স.) বলেন, ইমাম মাহদি প্রশস্ত ললাট এবং লম্বা ও সরু নাকের অধিকারী হবে।’ (আবু দাউদ: ৪২৮৫)

সেসময় পৃথিবীর পরিস্থিতি হবে ভয়ংকর। আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (স.) বলেছেন, ওই মহান সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ, অবশ্যই মানুষের ওপর এমন একটি জমানা আসবে যখন হত্যাকারী বুঝতে পারবে না কী কারণে হত্যা করেছে এবং নিহত ব্যক্তিও বুঝতে পারবে না কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে।’ (মুসলিম: ২৯০৮)

ইমাম মাহদির আত্মপ্রকাশের আলামতসংক্রান্ত এক হাদিসে এসেছে, কোনো এক জুমাবার হবে ১৫ রমজানে। সেদিন আকাশে বিকট আওয়াজ হবে। হাদিসটি হলো—ফিরোজ দায়লামি বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘কোনো এক রমজানে আওয়াজ আসবে’। সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! রমজানের শুরুতে নাকি মাঝামাঝি সময়ে? নাকি শেষ দিকে?’ নবীজি (স.) বললেন, ‘না, বরং রমজানের মাঝামাঝি সময়ে। ঠিক মধ্য রমজানের রাতে। শুক্রবার রাতে আকাশ থেকে একটি শব্দ আসবে। সেই শব্দের প্রচণ্ডতায় ৭০ হাজার মানুষ বেহুশ হয়ে যাবে আর ৭০ হাজার বধির হয়ে যাবে।’

উল্লেখিত বর্ণনাটি সহিহ নয়। বরং বিজ্ঞ হাদিস বিশারদরা এটিকে অত্যন্ত দুর্বল হিসেবে এবং অনেকে বাতিল ও বানোয়াট হাদিস বলে চিহ্নিত করেছেন। এই হাদিসের শেষের দিকে আছে, সাহাবিগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনার উম্মতের মধ্যে কারা সেদিন নিরাপদ থাকবে? নবীজি (স.) বললেন, ‘যারা নিজ নিজ ঘরে অবস্থানরত থাকবে, সেজদায় লুটিয়ে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করবে এবং উচ্চৈঃস্বরে আল্লাহু আকবর বলবে। পরে আরও একটি শব্দ আসবে। প্রথম শব্দটি হবে জিব্রাইলের, দ্বিতীয়টি হবে শয়তানের।

দীর্ঘ হাদিসে বর্ণিত ঘটনার পরম্পরা অনুযায়ী, শব্দ আসবে রমজানে। ঘোরতর যুদ্ধ সংঘটিত হবে শাওয়ালে। আরবের গোত্রগুলো বিদ্রোহ করবে জিলকদ মাসে। হাজি লুণ্ঠনের ঘটনা ঘটবে জিলহজ মাসে। আর মুহররমের শুরুটা আমার উম্মতের জন্য বিপদ, শেষটা মুক্তি। সেদিন মুসলমান যে বাহনে চড়ে মুক্তি লাভ করবে, সেটি তার কাছে এক লাখ মূল্যের বিনোদন সামগ্রীতে পরিপূর্ণ ঘরের চেয়েও বেশি উত্তম বলে বিবেচিত হবে।’ (আল ‍মুজামুল কাবির লিত তবারানি: ১৮/৩৩২/৮৫৩)

এই হাদিস সম্পর্কে শাইখ আলবানি (রহ) বলেন, হাদিসটি موضوع তথা বানোয়াট। ইবনুল জাওজি তার মাউজুআত তথা বানোয়াট হাদিস সংকলন গ্রন্থে হাদিসটি উল্লেখ করেছেন। (৩/১৯১)
ইমাম জাহাবি বলেন, হাদিসটি বাতিল। (তারতিবুল মাউজুআত: ২৭৮)
হাইসামি বলেন, এই হাদিসের বর্ণনা সূত্রে আব্দুল ওহাব ইবনুজ জাহহাক নামক একজন বর্ণনাকারী রয়েছে যে মুহাদ্দিসিনদের দৃষ্টিতে মাতরুক বা পরিত্যাজ্য। (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ৭/৩১৩)
ইমাম ইবনুল কাইয়িম বলেন, ‘অগ্রিম তারিখ নির্ধারণ করে বিভিন্ন ঘটনার বেশ কিছু হাদিস পাওয়া যায়। সেগুলো সহিহ নয়।’ এর মধ্যে একটি হলো—‘অর্ধ রমজানের জুমার রাতে একটি আওয়াজ হবে। এতে ৭০ হাজার মানুষ বেহুশ হয়ে পড়ে যাবে.. ৭০ হাজার মানুষ বোবা হয়ে যাবে..।’ (আল মানারুল মুনিফ: ৯৬ পৃষ্ঠা)

সুতরাং আমাদের কর্তব্য হলো— আল্লাহর রাসুল (স.)-এর হাদিস বর্ণনার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা এবং মিথ্যা, বানোয়াট বা অশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত হাদিস প্রচার থেকে সাবধান হওয়া। কেননা বানোয়াট, জাল-জয়িফ হাদিস দিয়ে ইসলামের লাভ-ক্ষতি কিছুই হয় না, বরং নিজের বড় ক্ষতি হয়। হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, যে ব্যক্তি জেনেশুনে রাসুল (স.)-এর নামে মিথ্যা হাদিস বর্ণনা করে তার পরিণাম হয় জাহান্নাম। (বুখারি, আস-সহিহ ১/৫২; ইবনু হাজার, ফাতহুল বারি ১/১৯৯, মুসলিম, আস-সহিহ: ১/৯)

সুতরাং দলিলযোগ্য নয় এমন বর্ণনা প্রচার করা থেকে সাবধান থাকতে হবে। কেয়ামতের আলামত সম্বলিত অনেক সহিহ হাদিস আছে। যথাসম্ভব ওসব হাদিস নিয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন। আল্লাহ তাআলা আমাদের ক্ষমা করুন, সবসময় হক কথা বলার তাওফিক দান করুন

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category