লাকসাম প্রতিনিধিঃ
লাকসাম মডেল কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কলেজ পরিচালক কমিটির সভাপতি।
শনিবার (৬ আগষ্ট) বিকেলে লাকসাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন,লাকসাম মডেল কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি খোদেজা বেগম লীনা। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ১৯৯৪ সালে লাকসাম রেলওয়ে জংশনের পাশে একটি এনজিও সংস্থার নামে নামকরণ করে ব্রাড মহিলা কলেজ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেন তিনি এবং তার স্বামী।
পরবর্তীতে তিনি এবং তার স্বামী বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ বশির আহমেদ ১৯৯৫ সালে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাংলাদেশ রুরাল এসোসিয়েশান ফর ডেভেলপমেন্টকে (ব্রাড) ১০৬ শতক জমি দান করেন। ব্রাডের অর্থায়নে ওই কলেজটি দীর্ঘদিন ধরে পরিচালিত হয়ে আসছে। পরবর্তীকালে তৎকালীন সংসদ সদস্য বর্তমান স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম ও কলেজ প্রতিষ্ঠাতা বশির আহমেদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০০১ সালে কলেজটি এমপিও ভুক্ত হয়। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পরপরই ব্রাড কলেজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। ব্রাড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও ভূমিদাতা তৎকালীন ফেনী ফুলগাজী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ বীরমুক্তিযোদ্ধা বশির আহমেদের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক একাধিক মামলা করে তাকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করে বিএনপি জামায়াত চক্র। নাম পরিবর্তন করে ব্রাড মডেল কলেজ করা হয়। ২০০৫ সাল পর্যন্ত ব্রাড কলেজ হিসেবে কলেজটি পরিচালিত হয়ে আসলেও আমাদের দানকৃত ব্রাডের জমি দখল ও আত্মসাৎ করতে পরবর্তীতে লাকসাম মডেল কলেজ নামে আবারও নাম পরিবর্তন করে ওই কুচক্রীমহল।
এই কুচক্রীমহল হোতা কলেজের অধ্যক্ষ আবু তাহের নিজ ক্ষমতাবলে শুরু করেন বিবিন্ন অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা। যারফলে খলেজটি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, কলেজের নাম পরিবর্তন নিয়ে ২০০৬ সালে আমরা মহামান্য হাইকোর্টে একটি রীপ পিটিশন দায়ের করি। এ নিয়ে মহামান্য হাইকোর্ট বিভিন্ন মামলা দায়ের করা হয়েছে। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও ভূমিদাতা বীরমুক্তিযোদ্ধা বশির আহমেদের মৃত্যু পর কলেজ পরিচালনার জন্য ব্রাডের একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে চলতি বছর কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড আমাকে সভাপতি করে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি বিশেষ কমিটি অনুমোদন করেন।
কলেজ অধ্যক্ষ কমিটির কোন অনুমতি ছাড়াই স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। বিভিন্ন অসদাচরণের কারণ অধ্যক্ষ আবু তাহেরকে নোটিশ করা হলেও তিনি কোন জবাব দাখিল না করায় গত ৪ জুলাই অধ্যক্ষ আবু তাহেরকে সাময়িক বরখাস্ত ওই কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক সালমা জাহান চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়া হয়। সাময়িক বরখাস্ত থাকা অবস্থায় গত ২ আগষ্ট অধ্যক্ষ আবু তাহের কমিটির কাউকে না জানিয়ে তার বিদায় অনুষ্ঠানে বে-আইনী ভাবে অন্য একজনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করেন। তবে তিনি এ যাবৎকালে কলেজের আয়, ব্যয় অডিট রিপোর্ট, দান অনুদানের কোন কিছুই কলেজ পরিচালনা কমিটির কাছে দাখিল করেননি। যা কলেজ পরিচালনার ক্ষেত্রে বিধি বর্ধিভূত।
ব্রাড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও ভূমিদাতা বীরমুক্তিযোদ্ধা মরহুম বশির আহমেদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এবং বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য কলেজের নিয়ম শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন।