১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ| ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ| ২৬শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি| সকাল ৮:৩৯| হেমন্তকাল|
শিরোনাম:
কুমিল্লায় কৃষকদের মাঝে ধানের বীজ ও কৃষি উপকরণ বিতরণ কুমিল্লায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে নগদ অর্থ ও কৃষি প্রণোদনা বিতরণ বুড়িচংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় খণ্ড-বিখন্ড ৭ অটো রিকশা যাত্রী;আহত ২ কুমিল্লায় সদর দক্ষিণের ইউএনও’র সাথে মোতায়াল্লী সমিতির মত বিনিময় বরুড়ায় UNO’র সাথে মোতায়াল্লী সমিতির মত বিনিময় মনোহরগঞ্জের মৈশাতুয়ায় বিএনপির কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত বিএনপি ক্ষমতায় আসলে শিক্ষকদের সমস্যার সমাধান হবে- নাঙ্গলকোটে শিক্ষক সমাবেশে সেলিম ভূঁইয়া কুমিল্লায় জিয়া গবেষণা পরিষদ মহানগর শাখার উদ্যোগে কর্মীসভা অনুষ্ঠিত দ্রুত নির্বাচন দিয়ে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করুন-অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে যাঁরা ছিলেন সবাইকে নিয়ে সরকার গঠন করা হবে-বরকত উল্লাহ বুলু

ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষসহ ৭ শিক্ষক-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, জুন ৩, ২০২৪,
  • 120 Time View

জেলা প্রতিনিধি।।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু জাফর খানসহ সাতজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

দুদকের সেগুনবাগিচার প্রধান কার্যালয়ে (২৩ মে) দুদকের চেয়ারম্যানের নিকট  অভিযোগ করেন কলেজের শিক্ষক ক্লাব ও আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান শিক্ষা ইউনিট

দুইপাতার লিখিত অভিযোগের সঙ্গে ১৪ পাতার প্রমাণপত্র চেয়ারম্যানের নিকট দাখিল করেছেন প্রতিনিধিরা। অতিরিক্ত সংযুক্তিতে, ২০১৬ সালে গণিত বিভাগের প্রধান পদে থাকাকালীন ড. আবু জাফর খানের বিরুদ্ধে ‘প্রাকটিকালের টাকা না দিলে ফেল’ শিরোনামে সংবাদের কাটিং জমা দেয়া হয়।

অভিযোগে আরও চার শিক্ষকের নাম রয়েছে। তারা হলেন— উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মৃনাল কান্তি গোস্বামী, সদ্য সাবেক শিক্ষক পরিষদ নেতা ও  সমাজকর্ম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন, সমাজবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক তপন ভট্টাচার্য। একই ফিরিস্তিতে কলেজের তিনজন কর্মচারীর নাম রয়েছে। তারা হলেন— হিসাবরক্ষক সাইফুদ্দিন সুমন, হিসাব সহকারী ইয়াছিন মিয়া, কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (সিইডিপি) প্রজেক্টের কম্পিউটার অপারেটর স্বপন কুমার।

মোট ১৪ পাতার প্রমাণপত্র ও দু’পাতার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বর্তমান অধ্যক্ষ যোগদানের পর ২০২১ সালের আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত কলেজে ৪৩টি ব্যাংক হিসাব থেকে প্রায় ১৩ কোটি টাকার ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে নিজেরাই বিলের বই ছাপিয়েছেন। ব্ল্যাংক বিলে নিজেদের ইচ্ছে মতো টাকা বসান তারা। প্রতিটি প্রোগ্রামে অধ্যক্ষ ৩০%, উপাধ্যক্ষ ১৫%, শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক ১৫%, কমিটির সদস্য/পরিষদের সদস্য ৭.৫% কমিশন ভোগ করেন। সরকারি পরিপত্রে অধ্যক্ষ যেকোনো পাবলিক পরীক্ষায় সবোর্চ্চ ১০ হাজার টাকা সন্মানি গ্রহণের কথা থাকলেও ৭০ হাজার থেকে লাখ টাকা না দিলে স্বাক্ষর করেন না অধ্যক্ষ আবু জাফর।

বনবিভাগের ছাড়পত্র না নিয়ে, ও পরিবেশ অধিদফতরের সরকারি ফি পরিশোধ না করেই কলেজের ১১টি গাছ কেটে গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উপজেলার ঠাকুরচরে নিয়ে যান অধ্যক্ষ।

 

এব্যাপারে কুমিল্লা বন বিভাগের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান সহকারী, মো. জাকির হোসেন বলেন, আমি নতুন জয়েন করেছি। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অর্ধশত বছরের পুরনো কয়েকটি গাছ কেটে ফেলার ব্যাপারে তারা কিছু জানেন না বলে জানান।

তিনি আরও বলেন, আমি যতটুকু জানি গাছগুলো কাটার ব্যাপারে বন বিভাগের অবশ্যই অনুমতি নিতে হবে। সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের গাছ অপসারণের প্রয়োজন হলে তা প্রথমে বন বিভাগকে লিখিতভাবে জানাতে হয়। বন বিভাগ কাটার প্রয়োজনীয়তা কতটুকু, তা জানতে সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করে।

কুমিল্লা পরিবেশ অধিদফতরের তৎকালীন উপ-পরিচালক শওকত আরা কলি বলেন, সরকারি কলেজের গাছ কাটতে গেলে পরিবেশ অধিদফতরকে জানানোর কথা; কিন্তু কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ প্রশাসন বিষয়টি অধিদফতরকে জানায়নি।

ল্যাবরেটরি ও বিসিসি ল্যাব ফি আদায় হলেও বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাবগুলোতে কোনো ক্যামিক্যাল দেওয়া হয় না। কলেজের ২২টি ডিপার্টমেন্টের শিক্ষা সফরের ফি প্রদানের পর, সে টাকা থেকে ৩০% কর্তন করা হয়। একই সঙ্গে সেমিনারে অধ্যক্ষ প্রায় চাঁদা দাবি করেন। ২০২১-২২ ও  ২০২২-২৩ অর্থবছরে অডিট কাজে ঘুষ প্রদানের নামে ১৮টি ডিপার্টমেন্ট থেকে ৬০ হাজার টাকা গ্রহণ করেছেন অধ্যক্ষ। এছাড়াও সেমিনারের বই কেনার ভাউচার করে সে টাকায় পিঠা উৎসব করেছেন তিনি। কলেজের তিনটি মসজিদে মুসল্লিরা জুমার দিন যে টাকা দান করেন তা মসজিদ একাউন্টে জমা দেওয়া হয় না। গত ২৮ বছর ছাত্র সংসদের কার্যক্রম নেই। সরকারি পরিপত্র না মেনে ছাত্র সংসদ, ম্যাগাজিন, আন্তঃক্রীড়াসহ এমন ৯টি হিসাব থেকে কোনো কার্যক্রম না থাকলেও ব্যাংক থেকে অন্য খাত দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করা হয়। অধ্যক্ষ জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটির সদস্য হিসেবে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করেন। দুদকে এমন অভিযোগও করা হয়েছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) বৃহত্তর কুমিল্লা অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক প্রফেসর সোমেশ কর চৌধুরী সোমবার (৩ জুন) মুঠোফোনে জানান, দুদক প্রধান কার্যালয়ে আবু জাফর খান সম্পর্কে দুদকের অভিযোগ সম্পর্কে আমার জানা নেই। আমি বেশ কয়েকজন সাংবাদিকদের কাছে শুনেছি। এ ব্যাপারে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি আমরা।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষক ক্লাবের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা দুদকের ঢাকার প্রধান কার্যালয়ে কলেজের অধ্যক্ষ সম্পর্কে ১৫টি  অভিযোগ দিয়েছি। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অত্যাবশকীয় বাড়তি ফি, পরিবহন খাত এবং ছাত্র সংসদের বেশ কয়েকটি দুর্নীতির অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

২০১৬ সালে আবু জাফর খান যখন গণিত বিভাগের প্রধান ছিলেন তখন ছাত্রদের কাছ থেকে ফরম ফিলাপ বাবদ বিপুল ফি আদায়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান শিক্ষা ইউনিটের এক শিক্ষিকা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রিন্সিপাল স্যার মিটিংয়ে আমাকে অপমান করেছেন। উনি মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কোটা আসলে সহ্য করতে পারেন না। আমরা সরকারি চাকরি করি, তাই মিডিয়াতে বেশি কথা বলতে পারি না।

কুমিল্লা কোতোয়ালি থামার অফিসার ইনচার্জ ওসি মো. ফিরোজ হোসেন জানান, এটা তো পুলিশের কাজ নয় তারপরও আমরা লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) লিখিত অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে রোববার (২ জুন) সন্ধ্যায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু জাফর খান মুঠোফোনে বলেন, দুদক প্রধান কার্যালয়ে অভিযোগ করা হয়েছে এ বিষয়ে আমার জানা নেই। ২০১৬ সালে স্থানীয় দুটি দৈনিক পত্রিকায় আপনার দুর্নীতি নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে এব্যাপারে আপনার মন্তব্য কি? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা আমার মনে নেই।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category