ফজলুল হক জয়||
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) নির্বাচনী এলাকায় অর্ধ ডজনের উপরে প্রার্থী থাকলেও শক্ত অবস্থানে রয়েছেন বিএনপির অল্প কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাশী।আগামী সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে অনুসন্ধানে উঠে আসে এমনই চিত্র।দলীয় পদ পদবী, সাংগঠনিক কার্যক্রম,দলের দুঃসময়ে হাল ধরা,দলীয় হাই কমান্ডের সাথে ভালো যোগসূত্র,জনসমর্থন,সেবা মূলক কার্যক্রম ইত্যাদি নানাবিদ দিক বিবেচনায় এগিয়ে রয়েছেন তারা।
আগামী সংসদ নির্বাচনের নির্দিষ্ট কোন রোড ম্যাপ ঘোষণা করা না হলেও মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বেশিরভাগই চৌষে বেড়ানোর চেষ্টা করছেন উপজেলার একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে।
এই আসনটিতে বিএনপি ৩টি গ্রুপে বিভক্ত হলেও আগামী নির্বাচনে অর্ধ ডজনের বেশি প্রার্থী মনোনয়ন চাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন।মাঠ জরিপে দেখা যায় তাদের মধ্যে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন যথাক্রমে কেন্দ্রীয় বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য মোঃ সায়েদুল হক সাঈদ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাসাসের সাবেক সভাপতি,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা ও জাতীয় নির্বাহী কমিটি,বিএনপির সদস্য সালাহ্উদ্দিন ভূঁইয়া শিশির,নবীনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট আব্দুল মান্নান ও নবীনগর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এবং বাংলাদেশ কৃষক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক কে. এম. মামুন অর রশীদ
যোগাযোগ করা হলে সায়েদুল হক সাঈদ রূপসী বাংলাকে বলেন,রাজনীতির মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণকে সেবা দেয়া।দলকে সু সংগঠিত করার লক্ষ্যেই দীর্ঘদিন যাবৎ দলের ব্যানারে থেকে মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে নবীনগর উপজেলার একজন যুবদল নেতা বলেন,নির্বাচনী ব্যয়ভার বহন এবং মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য অর্থ প্রয়োজন আর সে অর্থে-বিত্তে সমৃদ্ধ নেতাদের অন্যতম হচ্ছেন সায়েদুল হক সাঈদ।
আগামী সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতিকের মনোনয়ন পাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে সালাহ্উদ্দিন ভূঁইয়া শিশির বলেন,বিভিন্ন পদ পদবীতে থেকে দলের জন্য নিবেদিত কর্মী হিসেবে সারা জীবন কাজ করে গেছেন তিনি।নবীনগরের জনগণের কল্যাণে কাজ করছেন সবসময় এবং তাদের অনুপ্রেরণায়ই তিনি মনোনয়ন চাইবেন।তিনি আরো জানান,বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নের বার্তাটুকু তিনি সর্বস্তরের জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।সালাউদ্দিন ভূঁইয়া শিশির প্রসঙ্গে উপজেলা বিএনপি’র একাধিক নেতা বলেন,অভিজ্ঞতা বিবেচনায় আগামী সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে চমক দেখাতে পারেন সালাহ্উদ্দিন ভূঁইয়া শিশির।
মনোনয়নের বিষয়ে অভিমত জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আহবায়ক এবং নবীনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট এম এ মান্নান বলেন,নবীনগর উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নের বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠন সহ আপামর জনসাধারণের অনুপ্রেরণায় তিনি দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন।দল সবকিছু বিবেচনায় এবারের মনোনয়ন তাকে দেবেন বলেই তিনি বিশ্বাসী।মাঠ জরীপে দেখা যায়, তৃণমূল বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অধিকাংশই মনে করেন এই আসনটিতে বিএনপিকে জয়ী করতে হলে একমাত্র অভিজ্ঞ এবং সুদক্ষ নেতা একজনই- তিনি হচ্ছেন এডভোকেট আবদুল মান্নান।
কৃষক দল থেকে কুমিল্লা অঞ্চলের একমাত্র প্রার্থী হিসেবে নিজেকে মনোনয়ন পাওয়ার দাবিদার উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় কৃষক দল নেতা কে এম মামুন অর রশীদ বলেন, তারেক রহমানের নির্দেশে ইতিমধ্যেই তিনি উপজেলার বেশিরভাগ ইউনিয়নেই কৃষক সমাবেশ সম্পন্ন করেছেন।বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।আগামী সংসদ নির্বাচনে সবকিছু বিবেচনায় তিনি দলীয় মনোনয়ন পাবেন বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
নবীনগর উপজেলায় আরো আলোচনায় রয়েছেন প্রবীণ বিএনপি নেতা তকদির হোসেন মো: জসিম। অনেকের মতে এই উপজেলায় বিএনপিকে সুসংগঠিত করার পেছনে অবদান রয়েছে এই নেতার।বর্তমানে শারীরিক অসুস্থ্যতা জনিত কারণে পরিপূর্ণভাবে ভোটের মাঠে দৌড়াতে না পারলেও দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। নবীনগরে প্রার্থী হিসেবে জোরেসোড়ে শোনা যাচ্ছে কাজী নাজমুল হোসেন তাপসের নাম।এর সত্যতা জানতে চাইলে তিনি বলেন নিজের ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তবে সময় হলেই সবাই সবকিছু জানতে পারবেন।
নবীনগর উপজেলার দলীয় অনেক নেতাকর্মী মনে করেন বিএনপির মত বড় একটি দলে গ্রুপিং এবং একাধিক প্রার্থী থাকাটা স্বাভাবিক।তারা মনে করেন,ধানের শীষের নমিনেশন যিনি পাবেন গ্রুপিং- দ্বন্দ্ব ভুলে তার জন্য সবাই একাট্টা হয়ে কাজ করবেন।