ফজলুল হক জয় ও নেকবর হোসেন।।
কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ৫৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকায় বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থায় প্রধান শিক্ষকশূন্যতায় এসব বিদ্যালয় অনেকটাই অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়ছে। প্রধান শিক্ষক না থাকায় সহকারী শিক্ষকরাই এ পদে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ফলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। দ্রুত এ সমস্যা নিরসন প্রয়োজন বলে মনে করছেন শিক্ষক-অভিভাবকসহ সবাই। উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ১৮৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৫৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক।
জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক না থাকায় বিদ্যালয়গুলোতে ভারপাপ্ত হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন সিনিয়র শিক্ষকরা। এতে স্কুল পরিচালনা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পালন শেষে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তারা, ফলে ব্যাঘাত ঘটছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম।
দেবীদ্বার পৌরসভার ১৪০নং বিজুলীপাঞ্জার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ৭ মার্চ ২০২৩ সালে এ স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেনের মৃত্যু হলে তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তার সহকারী শিক্ষক পদ থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হওয়ায় স্কুলের কার্যক্রমে চাপ বেড়েছে।
রাজামেহার ইউনিয়নের ৮৬নং রাজামেহার পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহিন সুলতানা জানান ২০২৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নূরুন নাহার শারীরিক অসুস্থ হলে তার দায়িত্বটা তিনি গ্রহণ করেন, এতে তার সহকারী শিক্ষক থেকে সরে আসায় ছাত্রছাত্রীর পাঠদান ব্যাহাত হচ্ছে। এছাড়াও স্কুলের অতিরিক্ত কাজ করতে গিয়ে সমস্যা ভোগ করতে হয় বাকি শিক্ষকরা, তাই দ্রুত এ সমস্যা সমাধান চান তিনি। উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের ১১২নং উত্তর মোহনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী ২০১৯ সালে অসুস্থ হয়ে অবসরে গেলে এ স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন রোমানা আক্তার। পাঁচ বছর ধরে তিনি এ স্কুলের একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছে, এতে স্কুলের পাঠদানে যেমন সমস্যা হচ্ছে তেমনি কাজের চাপও সামলাতে হয় এ শিক্ষক। তাই এ সমস্যা সমাধানে দ্রুত নিরসন চান তিনি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সফিউল আলম বলেন, পদোন্নতির মাধ্যমে ৬৫ শতাংশ প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হয়ে থাকে। জেলার কয়েকটি উপজেলার নথি মন্ত্রণালয়ে জমা আছে, সেখান থেকে অনুমোদন হলে এ সমস্যা কেটে যাবে।
এদিকে, আজ বুধবার দুপুরে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন জানান, যে সব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই তার তালিকা প্রাথমিক গণশিক্ষা অধিদপ্তরের পাঠানো হয়েছে এবং শিক্ষক পদোন্নতির নিয়োগের মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধান হবে।