নেকবর হোসেন।।
কুমিল্লার তিতাসে উপজেলা পরিষদের মাসিক সাধারণ সভা চলাকালীন সময় কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবলীগ নেতা সারোয়ার হোসেন বাবুর নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। হামলায় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন ফকির, দুই ইউপি চেয়ারম্যানসহ আরও ৫-৬ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। হামলার একটি সিসি টিভি ফুটেজ এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে।
কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট সৈয়দ শামসুল তাবরীজ জানান, সরকারি সভায় এভাবে হামলার ঘটনা অনাকাঙ্খিত এবং স্পর্শকাতর। এই ঘটনায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৩০/৪০ জনের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।
ওই সভার সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান পারভেজ হোসেন সরকার জানান, সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হাসান, সহকারী কমিশিনার (ভূমি), উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং সরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সভা চলছিল। এ সময় হঠাৎ কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সারওয়ার হোসেন বাবু ও তিতাস উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কামরুল হাসান তুষারের নেতৃত্বে তাদের ২০-৩০ জন অনুসারী সভাস্থলে এসে হামলা চালায়। এতে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন ফকির, বলরামপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নুরুন্নবী ও সাতানী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শামসুল হক সরকারসহ আরও ৫/৬ জন আহত হয়। এসময় আমি নিজে, ইউএনও এবং উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। এতে মাসিক সভাটি প- হয়ে যায়। সদ্য সমাপ্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধের জের ধরে জনপ্রতিধিদের টার্গেট করে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলেও অভিযোগ করেন পারভেজ সরকার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, এভাবে প্রকাশ্যে সভায় প্রবেশ করে হামলা ও মারধর করার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন ফকির বলেন, আমরা তো এমন হামলার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। প্রশাসনের সভায় এমন সন্ত্রাসী তান্ডব নজিরবিহীন। আশা করি প্রশাসন দ্রুত জড়িতদের গ্রেফতার করবে।
তবে অভিযুক্ত সারওয়ার হোসেন বাবু বলেন, ওই সভায় বসে আমাদের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে কটুক্তি করায় আমার অনুসারী ছেলেরা সেখানে গিয়ে প্রতিবাদ করেছে। আমি গিয়ে তাদের সরিয়ে আনি। বড় ধরনের কিছু হয়নি।
তিতাস থানার ওসি কাঞ্চন কান্তি দাস বলেন, এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয়ের অফিস সহকারী নেছার উদ্দিন বাদী হয়ে সারওয়ার হোসেন বাবুকে প্রধান আসামী করে ৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।