চট্টগ্রাম-১৩ আসনে মাঠে বিএনপি’র ৫ প্রার্থী; আলোচনায় ৩
ফজলুল হক জয়||
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোড ম্যাপ ঘোষিত হওয়ার পর চট্টগ্রাম- ১৩ (কর্ণফুলী-আনোয়ারা) সংসদীয় আসনে বিএনপি’র মনোনয়নের অপেক্ষায় প্রায় অর্ধ ডজন প্রার্থী থাকলেও সর্বত্র আলোচনায় ৩ জনের নাম। এ তিনজন হচ্ছেন যথাক্রমে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক আলী আব্বাস, সদস্য সচিব লায়ন হেলাল উদ্দিন এবং সাবেক এমপি সারোয়ার জামাল নিজাম।চাউর রয়েছে শিগগিরই এ তিনজনের যেকোন একজন বিএনপির হাইকমান্ড থেকে সবুজ সংকেত পেতে পারেন।
স্থানীয় সূত্র মতে,দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক আলী আব্বাস আওয়ামী ফ্যাসিস্টের শাসনামলে দীর্ঘদিন কারাবরণ করেছেন। ব্যবসা-বাণিজ্য সহ পারিবারিকভাবেও বেশ কোণঠাসাও হয়েছিলেন এই নেতা। তারপরও তিনি জাতীয়তাবাদের আদর্শকে ধারণ করে দলের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্য কাজ করেছিলেন। দল চট্টগ্রাম-১৩ আসন থেকে নমিনেশন প্রধানের মাধ্যমে তাকে এইবার সেই মূল্যায়ন করতে যাচ্ছে চট্টগ্রামের সর্বমহলে চাউর উঠেছে এমন কথা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় অনেক নেতাকর্মীরা মনে করেন আলী আব্বাস অসহায়, নির্যাতিত মানুষের পাশে সব সময় ছিলেন এবং এখনো আছেন তাই কর্ণফুলী, আনোয়ারার আপামর জনসাধারণ তাকে ভোট দিতে অধীর আগ্রহে প্রহর গুনছেন।
এই আসনে অপর হেভিওয়েট প্রার্থী হচ্ছেন লায়ন হেলাল উদ্দিন,তার রয়েছে বিশাল কর্মী বাহিনী। চট্টগ্রাম- ১৩ আসনের সাধারণ ভোটার এবং সমর্থকগণ মনে করেন এইবার এই আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন লায়ন হেলাল উদ্দিন।
এই আসনে সাবেক সংসদ সদস্য সারওয়ার জামাল নিজাম এবারও দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। অনুসন্ধানের ভিত্তিতে পাওয়া তথ্য মতে জানা যায়,সারোয়ার জামাল নিজাম তিনবারের সংসদ সদস্য হলেও গত আন্দোলন- সংগ্রামে মাঠে সরব ছিলেন না,দেখা যায়নি তাকে দলীয় অনেক কর্মকান্ডে। তাই এবারের হেভী ওয়েট মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকায় তিনি ঠাই করে নিতে পারেননি। তারপরও অভিজ্ঞতার ঝুলি বিবেচনায় গ্রীন সিগন্যাল পেতে পারেন প্রবীণ এই নেতাও-এমন মন্তব্যও পাওয়া গিয়েছে স্থানীয় অনুসন্ধানে।
এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশ্যীদের তালিকার আরো দুইজনের নাম শোনা যাচ্ছে। তারা হচ্ছেন এসএম মামুন মিয়া এবং মোস্তাফিজুর রহমান।জানা যায়,দলীয় মনোনয়ন ভাগিয়ে নিতে এই দুই প্রার্থীও কাজ করছেন কৌশলে।
মনোনয়ন ও নির্বাচন প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে আলী আব্বাস বলেন,বিএনপি’র একজন নিবেদিত কর্মী হওয়ার কারণে বাংলাদেশের এমন কোন জেলখানা নেই যেখানে আমাকে নেয়া হয়নি। পাঁচ শতাধিকের উপর মামলা আমার নামে হয়েছিল তারপরও একদিনের জন্য এ দল থেকে নিজেকে আড়াল করিনি।একজন ত্যাগী কর্মী হিসেবে দল আমার প্রতি সুদৃষ্টি দিবেন এমন বিশ্বাস প্রকাশ করেন আলী আব্বাস।মনোনয়ন পেলে সর্বোচ্চ ভোটের ব্যবধানে এই আসনটি দলকে উপর দিতে পারবেন বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
লায়ন হেলাল উদ্দিন বলেন,দল যেহেতু সদস্য সচিবের মত একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব আমাকে দিয়েছেন দলীয় মনোনয়নও আমাকে দিবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করি। তিনি বলেন,তিনি মনোনয়ন পেলে কর্ণফুলী, আনোয়ারাতে নতুন গণজোয়ার সৃষ্টি হবে।
কর্ণফুলী,আনোয়ারা এ দুটি উপজেলা নিয়ে চট্টগ্রাম-১৩ সংসদীয় আসন গঠিত।ইতিহাস বিশ্লেষণ করে দেখা যায় স্বাধীনতার পর থেকে এ যাবত পর্যন্ত এই আসনটিতে সবচেয়ে বেশি জয় পান বিএনপি তাই স্বাভাবিকভাবেই এটি বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এই দুই উপজেলার ভোটারগন অনেক বিচক্ষণ। তাই বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের অনেক নেতৃবৃন্দ মনে করেন এখানে এমন একজন প্রার্থী সিলেক্ট করতে হবে যিনি স্বাভাবিকভাবেই প্রান্তিক পর্যায়ে মানুষের সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ঠ এবং যার রয়েছে দলীয় ক্ষেত্রে অনেক অবদান।আর তা যদি না করা যায় তাহলে এ আসনটিতেও ধানের শীষের ভরাডুবি হতে পারে।