ফজলুল হক জয়, কুমিল্লা:
কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত উপ-মহাদেশের প্রাচীন সংবাদপত্র সাপ্তাহিক আমোদ এর সম্পাদক, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ও প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে কুমিল্লার আদালতে মামলা দায়ের করেছেন বিএনপি নেতা ও জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য ফজলুল করিম। তিনি কুমিল্লা মহানগর বিএনপির ৯নং ওয়ার্ডের যুগ্ম আহ্বায়ক। মামলার আসামিরা হলেন, সাপ্তাহিক আমোদের সম্পাদক বাকীন এম এ রাব্বী (বাকীন রাব্বী), ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মহিউদ্দিন মোল্লা, প্রতিবেদক তৈয়বুর রহমান সোহেল। সাপ্তাহিক আমোদ ১৯৫৫ সাল থেকে প্রকাশিত হয়ে আসছে।
মামলার স্বাক্ষীরা হলেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির আহবায়ক উৎবাতুল বারী আবু, আজমীর হোসেন শরীফ, সোহাগ হোসেন ও বিএনপি নেতা জহিরুল হক।
জানা যায় কুমিল্লা-৬ আসনের সাবেক সাংসদ ও কুমিল্লা মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ও তার মেয়ে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র ডা. তাহসীন বাহার সূচনা, কুমিল্লা মহানগর যুবলীগের আহবায়ক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম রিন্টু সহ এক ডজন নেতা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার বিষয় নিয়ে অনুসন্ধানী সংবাদ প্রকাশ করেন মাপ্তাহিক আমোদ। গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত ওই পত্রিকার প্রথম পাতায় লেখা হয় ’বিএনপি নেতাদের সহায়তায় পালালেন ওরা’। সংবাদটিতে আরো লেখা হয় কুমিল্লা মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সাথে জড়িত শীর্ষস্থানীয় তিন নেতা। যাদের দুজনের নামের আদ্যক্ষর আ এবং ও। এ সংবাদ প্রকাশের পর পুরো কুমিল্লাতে বিষয়টি টক অব দ্যা টাউনে পরিনত হয়। বাদী মামলায় উল্লেখ করেন, ওই সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন এবং কোন তথ্যসূত্র নেই। ওই সংবাদকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা মহানগর ও জেলা বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন ও মানহানীকর হয়েছে এবং বাদী একজন সক্রিয় নেতা হিসেবে সংক্ষুব্ধ হয়েছেন। যার ফলে বাদী ৫০০/৫০১/৫০২ ধারার বিধান মতে অভিযোগ আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আর্জি জানান।
সাপ্তাহিক আমোদের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিেনের কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি মহিউদ্দিন মোল্লা বলেন, প্রকাশিত সংবাদে আমরা কারো নাম উল্লেখ করিনি। আমাদের সোর্স থেকে পাওয়া তথ্যমতে নিউজে আমরা কয়েকটি অক্ষর দিয়েছি মাত্র। এতে করেই মামলা দায়ের হয়েছে বলে শোনেছি। যেহেতু আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে সুতরাং আমরা সেটি আইনীভাবেই মোকাবেলা করবো।
এদিকে মামলার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকে কুমিল্লার কর্মরত সাংবাদিকদের মধ্যে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এই মামলা প্রত্যাহার না হলে মানববন্ধ ও তীব্র আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী মো: মাসুদ হাসান জানান, মামলাটি আমলে নিয়েছেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমলী আদালতের বিচারক আব্বাস উদ্দিন। তিনি মামলাটি পিবিআই কে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।