নিজস্ব প্রতিবেদক।।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার নিমসারে ঢাকা -চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে অবস্থিত নিমসার জুনাব আলী কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক মেসেঞ্জারে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগের ভিত্তিতে অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে বৃহস্পতিবার (১১ আগষ্ট) সকাল ১১ টা হতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে কলেজ প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ওই কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদরা বলেন, কলেজ অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মামুন মিয়া মজুমদার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একাদশ শ্রেণীর প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেয়। এই কথোপকথনের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে গেলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে নানাভাবে হুমকি দেন তিনি ।
এ ঘটনা জানাজানি হলে কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একজন একাদশ শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ইয়াসিন আহমেদ বলেন, “আমাদের এক সহপাঠীকে প্রিন্সিপাল স্যার ফেসবুকে অশ্লীল কথা বলছে। এই ঘটনার পর হতে প্রিন্সিপাল স্যারের স্ত্রী’সহ অনেকেই তাকে নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছে। তাকে কলেজ থেকে টিসি দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমাদের দাবি ওনাকে পদত্যাগ করতে হবে এবং দাবি না আদায় হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাস বর্জন করব”।
আন্দোলনরত ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সহপাঠী আমেনা আক্তার বলেন, “আমাদের প্রিন্সিপাল স্যার আমাদের এক সহপাঠীকে বাজে কথা বলেছে। আমরা ওনার পদত্যাগ চাই। আমাদের সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব ওনার কিন্তু উনি নিজেই যদি এমন করে তাহলে আমরা কিভাবে কলেজে আসবো পড়াশোনা করব ।”
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানায়,”কলেজের অধ্যক্ষ স্যার সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম মেসেঞ্জারে আমাকে খারাপ কথা বলে, এরপর আমি স্যারর আচরণের কথা আমার বন্ধুদের বললে উনি আমাকে এসব কথা ফাঁস করতে না করেন। উনি আমাকে উপবৃত্তি দিবে বলে, কলেজে ফ্রি পড়ানো সহ নানা প্রলোভন দেখায়। উনি আমার কাছে বাজে ছবি চায় এবং নিজের বাজে ছবিও আমাকে পাঠায়। এরপর উনি আমাকে বলেন এসব কাউকে বললে কলেজে পড়াশোনা বন্ধ করে দেবেন”।
এদিকে, এই ঘটনার বিচার দাবিতে সকাল ১১ টা হতে কলেজে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে খবর পেয়ে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মারুফ রহমান সহ সরকারি কর্মকর্তারা এসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে তাদের শান্ত করার চেষ্টা চালান। এসময় ইউএনও প্রতিষ্ঠানের অনান্য শিক্ষক ও অভিভাবক প্রতিনিধিদের নিয়ে কলেজে মিটিং বসেন।
অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মামুন মিয়া মজুমদারের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কিছু লোকজন মিলে আমাকে কলেজ থেকে বিতাড়িত করার জন্য একটি সাজানো ঘটনা সৃষ্টি করেছে। মূলত অভিযোগকারী ছাত্রীকে কোন প্রকার যৌন হয়রানি মুলক মেসেজ বা অশ্লীল ছবি পাঠাই নি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে একটি মহল। তিনি আরো বলেন “এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করা ছাড়া আপনারা সাংবাদিকদের আর নিউজ নেই। ইউএনওর সাথে কথা না বলে উল্টোপাল্টা কোন নিউজ করলে মানহানীর মামলা করবো”।
এ বিষয়ে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হালিমা খাতুন জানান, “ভূক্তভূগি শিক্ষার্থী একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ ছামিউল ইসলামকে প্রধান করে ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে কমিটি অভিযোগের তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে “।